উখিয়ার হলদিয়াপালংয়ে অবৈধ স’মিল উচ্ছেদ অভিযান নামে বনবিভাগ বাণিজ্যে শুরু করেছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। কাঠ পাচারকারীদের নিকট হতে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিরহ লোকজনকে হয়রানীমূলক মামলায় আসামী করার ঘটনা নিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু সহ মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের পূর্ব হলদিয়াপালং পাতাবাড়ী গ্রামে ফরিদ আলমের বাড়ী সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি অবৈধ স’মিল উচ্ছেদ চালিয়ে কাঠ জব্দ করেন। গত ২৮ ফেব্রুয়ারী সহকারী কমিশনার ভূমি’র নেতৃত্বে উখিয়া বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম, হলদিয়াপালং বনবিটের এফজি সালেহ্ আহমদ সহ একদল বনকর্মী এ অভিযান পরিচালনা করেন। গ্রামবাসীরা অভিযোগ করে বলেন, বহু বন মামলার আসামী আব্দুর রাজ্জাকের মালিকানাধীন স’মিলটি অবৈধ ভাবে ফরিদ আলমের আঙ্গিনায় স্থাপন করে দীর্ঘদিন ধরে চোরাই গাছ চিরাই করে আসছিল। উক্ত অবৈধ স’মিলের কারণে সরকারী সংরক্ষিত বনাঞ্চল উজাড় করে আসছিল পাচারকারীরা।
উখিয়া বনবিভাগ স্থানীয় অধিবাসীদের অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৮ ফেব্রুয়ারী অভিযান পরিচালনা করতে বাধ্য হয়। এতে সফলও হয় বনবিভাগ। কিন্তু স’মিল উচ্ছেদের নামে হলদিয়া বনবিটের এফজি সালেহ্ আহমদ মোটা অংকের বাণিজ্য শুরু করে দিয়েছে।
বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, স’মিল উচ্ছেদ ও কাঠ জব্দ সংক্রান্ত বিষয়ে হলদিয়া বনবিটের এফজি সালেহ্ আহমদ বাদী হয়ে কক্সবাজার আদালতে ৩ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করে। যার নং- ২৬/২০১৭। এতে আসামী করা হয় পাতাবাড়ী গ্রামের মৃত ফরিদ আলমের পুত্র মোহাম্মদ আলম মিস্ত্রী, গুনু মিয়ার পুত্র মোহাম্মদ ইসমাঈল ও খেওয়াছড়ি গ্রামের হাজী হোছন আলীর পুত্র আব্দুর রহমান। বিজ্ঞ আদালত ১৭ এপ্রিলের মধ্যে নাম ঠিকানা যাচাই-বাচাই করে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করেন বলে জানা গেছে।
অভিযোগে প্রকাশ, যাদের বাড়ীর আঙ্গিনায় স’মিল উচ্ছেদ করা হয়েছে বা স’মিলের মালিককে আসামী না করে নিরহ লোকদের কে আসামী করা হয়েছে। মোটা অংকের টাকার বিনিময় স’মিলের মালিক আব্দুর রাজ্জাক ও ফরিদ আলমকে রহস্যজনক ভাবে মামলায় থেকে বাদ দেওয়ার ঘটনা নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সহ মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এসব অপকর্মের নাটেরগুরু হচ্ছে ছৈয়দ হোছন। এলাকাবাসীর মতে আলম মিস্ত্রী ও মোহাম্মদ ইসমাঈল স’মিলের ঘটনায় জড়িত ছিল না। কাঠ পাচারকারীদের নিকট হতে মোটা অংকের টাকা নিয়ে নিরহ মানুষকে জড়ানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হলদিয়াপালং বিটের এফজি সালেহ্ আহমদ বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। তাই কাউকে চিনি না। লোকজনের কাছ থেকে শুনে মামলায় আসামী করা হয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে ফরিদ আলমের বাড়ীর সংলগ্ন এলাকা হতে স’মিল উচ্ছেদ ও আব্দুর রাজ্জাকের স’মিল বলে স্বীকার করলেও কেন মামলায় আসামী করা হয়নি জানতে চাইলে তিনি সদুত্তর দিতে পারেনি। সচেতন এলাকাবাসী অবিলম্বে দুর্নীতিবাজ বিট কর্মকর্তার এহেন মামলা বাণিজ্যের ঘটনা সরজমিন তদন্তপূর্বক নিরহ লোকদের কে হয়রানী থেকে মুক্ত করার জন্য বিভাগীয় বন কর্মকর্তার নিকট জোরদাবী জানিয়েছেন।
পাঠকের মতামত: